নৈতিকতা ও সততা দ্বারা প্রভাবিত আচরণগত উৎকর্ষ শুদ্ধাচার ধারণার মূলভিত্তি। ব্যক্তি সমষ্টিতেই প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি; প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়ে শুদ্ধাচার অনুশীলন গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বিষয়ে একটি সম্যক ধারনা লাভের উদ্দেশ্যেই বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক আজকের কর্মশালার আয়োজন।
বিদ্যুৎ খাত একটি সেবাধর্মী খাত। বিদ্যুৎ সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করা হলে দুর্নীতি বহুলাংশে কমে যাবে। ব্যক্তি পর্যায়ে করণীয় সুনির্দিষ্টকরণ, কর্ম মূল্যায়ন, গ্রাহক সেবা দ্রুত পৌঁছে দেওয়া, ব্যক্তিগত অনুরাগ-বিরাগ বর্জন, রাষ্ট্রীয় সম্পদের সদ্ব্যবহার, একক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও ব্যক্তির আধিপত্য রোধ ইত্যাদি বিষয়গুলো জাতীয় পর্যায়ে শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠায় প্রণিধানযোগ্য। এজন্য মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও সংস্থা পর্যায়ে শুদ্ধাচার ও নৈতিকতা বিষয়ক কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় প্রণীত আইন, বিধিমালা ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান ও সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
রূপকল্প ২০২১, ৭ম পঞ্চম বার্ষিকী পরিকল্পনা ও কৌশলগত উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার বিদ্যুৎখাতে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ এ অভিলক্ষ্যকে সামনে রেখে বিভিন্ন স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ২০০৯ সালে বিদ্যুতের স্থাপিত ক্ষমতা ছিল ৪,৯৪২ মেগাওয়াট যা বর্তমানে ১৪,৫৩৯ মেগাওয়াটে (ক্যাপটিভসহ) উন্নীত হয়েছে। উন্নত গ্রাহক সেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ খাত ইতিমধ্যে নানামুখি উদ্ভাবনী ধারণা বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, প্রতিটি বিতরণ অফিসে সংযোগ ফি-এর তারিখ প্রদর্শন, মোবাইল/অনলাইনের মাধ্যমে বিল পরিশোধ, অন লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগের আবেদন গ্রহণ, ই-টেন্ডারিং ব্যবস্থা চালু, সিটিজেন চার্টার প্রবর্তন, গণশুনানীর মাধ্যমে অভিযোগ গ্রহণ ও দ্রুত নিষ্পত্তি, গ্রাহক অভিযোগ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে কল সেন্টার প্রতিষ্ঠা এবং সর্বোপরি সুশাসন ও জবাবদিহীতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে রেজাল্ট বেইজড ম্যানেজমেন্টের আওতায় বিদ্যুৎ সংস্থা সমূহে Key Performance Indicator (KPI) বাস্তবায়ন ইত্যাদি গৃহীত কার্যক্রম জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিদ্যুৎ উন্নয়নের চালিকা শক্তি। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে এবং ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হিসেবে পরিণত হবে। এ জন্য বিদ্যুৎ অবকাঠামোর উন্নয়ন ও মান সম্মত এবং নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সেবা গ্রাহক প্রান্তে পৌঁছে দেওয়া একান্ত প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে ব্যক্তি পর্যায়ে দক্ষতা বৃদ্ধি, সৎ ও নিষ্ঠাপরায়ণ হওয়া সর্বাগ্রে প্রয়োজন। জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল সংক্রান্ত আজকের কর্মশালার মাধ্যমে এ বিষয়ে আরো স্পষ্ট ধারণা ও সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে।